নিজেদের নিরাপত্তা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো খাদ্যশস্য রফতানি করবে না ইউক্রেন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সচিব অ্যালেক্সি দানিলভ এ কথা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বর্তমানে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দানিলভ বলেন, প্রথম বিষয় হচ্ছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং তার পরের বিষয়টিও ইউক্রেনের নিরাপত্তা। অর্থাৎ ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দেশের ভেতর থেকে কোনো খাদ্যশস্য পৃথিবীর কোথাও যাবে না। কারণ দেশের নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়।
‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা’ বলতে তিনি সম্ভবত রুশ সামরিক অভিযান বন্ধের কথা বলতে চেয়েছেন। একই সময়ে তিনি দাবি করেন, খাদ্য পরিস্থিতির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায়িত্বের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। দানিলভ এ কথাও বলেছেন, কেউ চায় না বিশ্ব ক্ষুধার্ত থাকুক।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে খাদ্য সংকট চরম রূপ নিয়েছে। খুব দ্রুতই পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। যদি এ অবস্থা থেকে উত্তরণে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তবে এ সংকট কেবল বহু মাস না, বহু বছর স্থায়ী হবে। বুধবার (৮ জুন) বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. আংগাউজি আকুঞ্জু-আইওয়েলা এমন তথ্য দিয়েছেন।
বিশ্বে সূর্যমুখী তেলের ৪২ শতাংশ, ভুট্টার ১৬ শতাংশ, বার্লির ১০ শতাংশ ও গমের ৯ শতাংশের সরবরাহ আসে ইউক্রেন থেকে। ডা. আংগাউজি বলেন, যদি ইউক্রেন থেকে এখনই খাদ্যশস্য বের করে নিয়ে আসতে না পারি, তবে জুলাইয়ে আবারও তারা একই পরিমাণের ফসল ঘরে তুলবে, যা অপচয় হয়ে যাবে। কারণ তাদের কাছে ইতোমধ্যে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য আছে, তা তারা রফতানি করতে পারেনি।
তার মতে, এতে আগামী কয়েক বছর ধরে খাদ্য সংকট অব্যাহত থাকবে। আর বিশ্বের কয়েকটি অংশের জন্য যা হবে ভয়াবহ। তিনি বলেন, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এসব দেশ কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী অঞ্চলগুলো থেখে খাদ্য ও সার আমদানি করে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনি গুতেরেস। তিনি বলেন, ১১৬ কোটি মানুষ এই যুদ্ধের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানির ওপর যুদ্ধের প্রভাব ব্যাপক, মারাত্মক। সময়ের সঙ্গে এ সংকট আরও তীব্রতর হচ্ছে।
পাঠকের মতামত